উইকিপিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েল্সের সাথে কিছুক্ষণ
গত পহেলা জুলাই হঠাৎ জিমি ওয়েল্সের একটি আমন্ত্রণ আমার ইমেইল ইনবক্সে পেলাম। আমন্ত্রণটি ছিল তার সাথে আমার অনলাইন ভিডিও সাক্ষাৎকারের একটি আমন্ত্রণ। তাতে তিনি জানালেন উইকিম্যানিয়াতে ছোট উইকিপিডিয়াগুলো সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করবেন। বাংলা উইকিপিডিয়া সম্পর্কে জানতে তিনি ঐ প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আমার সাথে একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার আয়োজনে ইচ্ছুক। সাক্ষাৎকারে জিমির সাথে যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয়েছে তার একটি ছোট বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করবো এই ব্লগে, যাতে আমার সহকর্মীরা এ বিষয়ে জানতে পারে এবং উইকিপিডিয়ার ব্যাপারে আরও উৎসাহী হতে পারে।
আমি সানন্দে তাকে এবং তার সহযোগীকে আমার সুবিধাজনক সময় জানিয়ে দিতেই তারা সে সময়ে সাক্ষাৎকারে অংশ নেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। ৪ঠা জুলাই রাত সাড়ে ১০টায় সময় ঠিক করা হল। কারণ জিমি তখন ছিলেন কলরাডোর ডেনভারে। সেখানে তখন সময় সকাল সাড়ে ১০টা। আমি ফিরতি মেইলে আমার স্কাইপে আইডি এবং আমার সেল ফোন নম্বর জানিয়ে দিলাম যেন স্কাইপে কাজ না করলেও তারা আমার সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে পারে।
৪ঠা জুলাই রাতে যথাসময়ে কম্পিউটারে স্কাইপে খুলে বসে গেলাম। মিটিং টাইমের আগেই জিমি আমাকে স্কাইপে তে নক করলো আমরা আমাদের কথপোকথন শুরু করলাম। আমার পরিচয় পর্ব শেষ করেই জিমি বাংলা উইকিপিডিয়াতে এখন কতগুলো নিবন্ধ রয়েছে, কতজন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রয়েছে তা জানতে চান। উত্তরে তাকে জানালাম বাংলা উইকিপিডিয়ায় নিবন্ধের সংখ্যা ২১৪৫০+ এবং এর অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের সংখ্যা ৮।
আমি কবে থেকে উইকিপিডিয়ায় কাজ করছি এবং কিভাবে উইকিপিডিয়া সম্পর্কে আগ্রহী হলাম এ বিষয়ে তিনি জানতে চাইলে। আমার উইকিপিডিয়ায় আগ্রহী হওয়ার গল্প তাকে বললাম। এক পর্যায় তিনি জানতে চাইলেন যখন আমি উইকিপিডিয়াতে লেখা শুরু করি তখন বাংলা উইকিপিডিয়াতে কতগুলো নিবন্ধ ছিল। এ প্রশ্নের উত্তরে তাকে বললাম, ২০০৬ এর এপ্রিল-মে তে যখন আমি উইকিপিডিয়াতে লেখা শুরু করি তখন বাংলা উইকিপিডিয়াতে প্রায় ৪৫০টি পাতা ছিল কিন্তু তাদের আসলে নিবন্ধ বলা যেত না।
উইকিম্যানিয়া ২০০৯ রিচার্ড স্টলম্যানের বক্তব্য
উইকিম্যানিয়া ২০০৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রিচার্ড স্টলম্যানের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন,
রিচার্ড স্টলম্যান এবং ফ্রি সফটওয়্যারের গান
উইকিম্যানিয়া ২০০৯ – কনফারেন্স শুরুর আগের দিন
গতকাল রাতে ঘুমিয়েও আজকে এখনও ক্লান্তি দূর হয়নি। সকাল থেকে হোটেলেই ছিলাম। অনেক পুরনো বন্ধুর সাথে দেখা হল। আনিরুধ এবং চেন্নাইয়ের সুন্দারামের সাথেও দেখা হয়েছে। সুন্দরামের কাছ থেকে ধার করা ইউরোপীয়ান প্লাগ এডাপটার দিয়ে ল্যাপটপ চার্জ দিয়েছি সকালে। এখনও প্লাগটি আমার সাথেই সুন্দরামকে ফেরত দেওয়া হয় নাই। ওর জন্য হোটেলের লবিতে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছি, কিন্তু ওর দেখা পাইনি।
বুয়েন হোটেল থেকে হাঁটা দুরত্বেই সম্মেলনের নির্ধারিত ভেন্যু। বুয়েনস আয়ারসে নতুন এবং ৯৫% লোক ইংরেজী বলে না (আসলে বলতেও চায় না), এ কারণে প্রায় ১.৩০ ঘন্টা লাগলো জায়গাটি খুঁজে বের করতে। যা হোক অবশেষে পাওয়া গেল। ইনফরমেশন ডেস্ক থেকে নাম খুঁজে সম্মেলনের আইডি কার্ড নিলাম। আগামীকাল কনফারেন্স শুরু হলেও আজকে ডেভেলপারদের জন্য “হেকার ডে” নামে একটি ইভেন্ট চলছে। উপরের তলাতে উইকিম্যানিয়া অংশগ্রহণকারীদের জন্য আড্ডা দেওয়ার জায়গা করা হয়েছে। স্ন্যাক্স এবং কোল্ড ড্রিংক্সেরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে।
গন্তব্য আর্জেন্টিনাঃ অনিশ্চয়তা এবং শেষবারের মত চেষ্টা
২২শে আগস্ট, ইউসুফ সেরাই, নয়া দিল্লী, ইন্ডিয়া। গেস্ট হাউসে অলস সময় কাটছে। দুবাইয়ের ফ্লাইট ২৪ তারিখ। নয়া দিল্লীতে শুধু আর্জেন্টিনার ভিসা নেওয়ার কাজ ছিল, ভিসা হয়ে গেছে। তাই কোন কাজ নেই। গেস্ট হাউসের ঘরেই টিভি দেখে সময় কাটছে। দুপুরে নান রুটি আর ডাল মাখানি নামক খাবার দিয়ে লাঞ্চ সারার পর সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে কিছু ইমেইল আদান প্রদানের কাজ সেরেছি। অনেকেই বলবেন, সময় আছে দিল্লী ঘুরলেইতো পারেন। দিল্লী ঘুরে দেখা যেত, কিন্তু একা একা কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে না। একে তো প্রচন্ড গরম তার উপরে একা দিল্লী ঘুরে বেড়ানোর খরচা অনেক। নয়া দিল্লীর যে এলাকাতে রয়েছি সেখানে রাস্তা ঘাটে অটো (ঢাকার সিএনজি) আর ক্যাব ছাড়া দিল্লীতে নতুনদের চলাচলের কোনো উপায় নেই। প্রাইভেট গাড়ি ছাড়া নয়া দিল্লীর এই এলাকায় যে বাসগুলো রয়েছে আমি তাতে সব সময়ই ভীর দেখেছি। আর যেহেতু হিন্দী পড়তে পারি না তাই বাসের গাঁয়ে লেখা গন্তব্যস্থল দেখেও বোঝার উপায় নাই এ গাড়ি কোথায় যাচ্ছে। এ জন্যই সময় কাটানোর জন্য ব্লগটি চালিয়ে যাই,
ঢাকা ভারতী দূতাবাসে ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিয়ে যেই জানতে পারলাম যে পাসপোর্ট ফিরত দিবে ১৯ তারিখ বিকেল বেলা। মাথায় প্রথমেই খেলে গেলো ১৯ তারিখ সকাল বেলা জেট এয়ারের যে টিকিট কনফার্ম করা ছিল তা পরিবর্তন করার কোনো উপায় আছে কিনা। ভিসা অফিসের ভিতর থেকেই বাবাকে ফোন দিলাম। এমিরেটস এয়ারলাইনে বাবার এক বন্ধু চাকুরী করতেন। তার থেকে জেনে আব্বা জানালেন মতিঝিলে ঘরোয়া রেস্টুরেন্টের অপর দিকে জেট এয়ারের একটি টিকিট বুথ আছে, সেখানে যোগাযোগ করতে। ভিসা অফিস থেকে বেড়িয়েই সেজ মামাকে বললাম মামা বাসায় না সরাসরি মতিঝিল জেট এয়ারের অফিসে যাবো। মামাও না করলেন না। মতিঝিল নেমে বেশ খানিকটা খুজেই ঢুকে পরলাম জেট এয়ারের অফিসে। দুপুর ১.৩০টা তখন। কাউন্টারে বসা ব্যক্তিকে আমার ই-টিকিটের কপি দেখিয়ে বললাম ১৯ তারিখের জেট এয়ারের ফ্লাইটটি ২০ তারিখে করে দিতে হবে। তিনি জানালেন প্রতিদিন সকালবেলা একটি ফ্লাইটই রয়েছে। আমি তা পরিবর্তন করে দিতে বললাম। টিকিট বুথের লোকটি তার সামনে বসা কম্পিউটারে ফ্লাইট পরিবর্তন করে, একটি কাগজ প্রিন্ট করে দিলেন। আর বললেন পুরো টিকিটটিই এমিরেটস এয়ারলাইনের ডকুমেন্টে করা হয়েছে, আমাকে এমিরেটস এর মতিঝিল অফিসে যেতে বললেন, সেখান থেকে আমার টিকিটটি রিভ্যালিড করে দেওয়া হবে।
গন্তব্য আর্জেন্টিনাঃ ভারতীয় ভিসা অভিজ্ঞতা
২১শে আগস্ট রাত ১১.৩০ নয়া দিল্লীর ইউসুফ সেরাইতে এক গেষ্ট হাউসে বসে বসে লিখছি মাত্র ৪ দিন আগেকার অভিজ্ঞতার কথা। ১৭ তারিখ রাত আড়াইটায় সেজ মামাকে নিয়ে বাবার ঠিক করে দেওয়া গাড়িতে করে বের হলাম গুলশান ১ এর ভারতীয় দূতাবাসে উদ্দেশ্যে। রাত ৩টায় পৌছে গেলাম দূতাবাসের সামনে। মনে মধ্যে অজানা ভয়। দূতাবাসের সামনে গিয়ে দেখি, গোটা কয়েক গার্ড আর পুলিশ ছাড়া আর কেউ নেই। আশ্চর্য!!! এতো রাত করে লাইনে দাড়াবার জন্য এসেছি। কিন্তু কোথায় সেই লাইন? লাইন কোত্থেকে আসবে মানুষই তো দেখছি না! গার্ডদের জিজ্ঞাসা করলাম কেউ বলছে, “দেখেন সামনে যে পার্ক আছে ঐখানে কোনো লোক আছে নাকি”, কেউ বলছে “এখন আর তেমন লোক হয় না, গতকালকেও দেখেছি সকাল ১০টার মধ্যেই সব শেষ”। তাদের কথা শুনে সাময়িক ভাবে ভাল অনুভব করলাম। তারপরেও বিশ্বাস হচ্ছে না, কারণ দিনে যখন টাকা এন্ডোর্স করাতে গিয়েছিলাম তখনও লোকজন বলছিল রাতে বিশাল লাইন হবে। মামা তখন ভাবছে, বাসায় ফিরত গিয়ে সকালে আবার আসলে কেমন হয়! হঠাৎ এক চা ওয়ালাকে দেখতে পেলাম হাতে চায়ের ফ্লাস্ক আর বিস্কুট নিয়ে যাচ্ছে। চা খাবো কিনা মামা জিজ্ঞাসা করলো, তখন মামাই বললো আচ্ছে এই চা ওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করে দেখি যে ও কত দিন যাবৎ এখানে চা বিক্রি করছে, আর ঐ বলতে পারবে এখানকার লাইন কোথায় গেল! জিজ্ঞাসা করাতে চা ওয়ালা বললো সেও চা বিক্রি করতেই ঐ লাইনের কাছেই যাচ্ছে। শুনে আগের সাময়িক ভাল লাগা আবারও উবে গেল।
চা ওয়ালা আরও জানালো দূতাবাস থেকে দূরে গুলশানে খিলের জায়গা যেখানে ভরে ফেলা হচ্ছে সেখানেই নাকি লোকজন লাইনে বসে আছে। মামা আর আমি তাড়াতাড়ি ওদিকে ছুটলাম। অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। শুধু একটা গাছ দেখা যাচ্ছে আর দুটো ডিম পরোটা বিক্রি করার ভ্যান গাড়ির কুপির আলো দেখা যাচ্ছে। কাছে যেতেই দেখা গেলো বেশ কিছু লোক গাছে নিচে বসে আছে। আরও ভাল করে তাকিয়ে দেখি শুধু গাছের নিচেই নয় আরও সামনে এবং গাছের পিছন দিকেও মানুষ বসা। হায়! অন্য এক চা ওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করাতে সে আমাদের লাইনের শেষটা দেখিয়ে দিলো। ব্যাস মামা ভাগ্নে পেপার বিছিয়ে বসে গেলাম লাইনের শেষে। রাত তখন ৩.৩০। চা ওয়ালা চা খাওয়ালো। মামা বিস্কুট নিতে বললো। এতো রাতে বিস্কুট দিয়ে চা খারাপ লাগলো না।
গন্তব্য আর্জেন্টিনাঃ ভারতীয় দূতাবাসে অভিজ্ঞতাপূর্ব প্রস্তুতি
এ লেখাটি লিখছি, নয়া দল্লীর ভাসান্ত বিহারে আর্জেন্টিনা দূতাবাসের সামনে পার্কে বসে। ঢাকায় ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করতে মাত্র সময় রয়েছে ৩ দিন। ১৬, ১৭ এবং ১৮ শে আগস্ট তারিখ। এর মধ্যে আমাকে ভারতের ভিসা তুলতে হবে এবং ১৯ শে আগস্ট আমাকে নয়া দিল্লী পৌছে ঐ দিনই আর্জেন্টিনার ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
ভারতের ভিসার জন্য কাগজপত্র এবং টাকা এন্ডোর্সমেন্ট কিছুই হয়নি। সিদ্ধান্ত নিলাম ১৬ তারিখে ভারতের জন্য টাকা এন্ডোর্স করাবো। জানতে পারলাম ভারতের ভিসা পেতে অবশ্যই তাদের নির্ধারিত কিছু ব্যাংক থেকে টাকা এন্ডোর্স করাতে হবে। আর এর মধ্যে সবচেয়ে ভাল হয় যদি তা স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার মতিঝিল শাখা থেকে করা যায়। এদিকে এন্ডোর্সমেন্ট এবং ভিসার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনী কনফারেন্সের আয়োজকদের কাছ থেকে আমন্ত্রণ পত্র, হোটেল বুকিং এর কাগজপত্র প্যাট্রিসিও ইমেইল করে দিয়েছে। অন্য দিকে উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের সারার করা বুকিং এর ই-টিকিটের কপি এজেন্সি ওয়ালারা আমাকে ইমেইল করে দিয়েছে। এ কাগজপত্র গুলো সহ, বেশ কিছু টাকা নিয়ে মতিঝিল গেলাম। টাকা গুলো গুছোতে একটু সময় লেগে গেলো ফলে ব্যাংকে পৌছালাম দুপুর ১২ টা ৪৫ এ। যেয়ে দেখি বিশাল এক লাইন ব্যাংকের সামনে। এবং সবার হাতেই একটি টোকেন দেওয়া। জানলাম টোকেন নাকি ভিতর থেকে দেওয়া হয়। এখন আর দিবে কিনা তা কেউ বলতে পারছেন না। আমার সঙ্গে আমার এক ভাই ছিল, ওনাকে বললাম ভিতরে যেয়ে দেখে আসতে আমি লাইনে আছি। তিনি ভিতরে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ পরে বেড়িয়ে এলেন। এসে বললেন অনেক অনুরোধ করে একটি টোকেন তিনি যোগার করেছেন, টোকেন নম্বর হল ১০০। আবারও লাইনে দাড়ালাম। ব্যাংকের গেটে দাঁড়ানো গার্ড ৫ থেকে ৭ জন করে একবারে ব্যংকের গেট দিয়ে ডুকাচ্ছে। দেখতে দেখতে দুপুরের খাবারের সময় চলে এলো কিন্তু আমরা গেটের বাইরে রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে রইলাম। আমার মনে হতে লাগলো এই বুঝি ভারতের ভিসা তোলার সংগ্রাম শুরু হলো। এবং শুরু অভিজ্ঞতাই তা বলছে তা আগামীতে কতদূর এসে দাঁড়াবে তা আর বুঝতে বাকি রইলো না। মনে মনে চিন্তা করলাম, সংগ্রাম যখন শুরু করেছি এর শেষ না দেখে আর হাল ছাড়বো না। মানসিক এবং শারিরিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে লাগলাম। অবশেষ বিকাল ৩.৩০ এ ব্যাংকের ভিতরে ঢুকার সৌভাগ্য হল। সেখানে আমাকে একটি ফরম দেওয়া হল পূরণ করার জন্য। ফরম পূরণ করে জমা দিতেই সেখানকার লোক বললো কাজ এখনও বাকি আছে। এটি জমা দিলে ভিতর থেকে আমাকে ভাউচার দিবে এবং ভাউচার জমা দিলেই কেবল আমাকে টাকা এন্ডোর্স করতে দেওয়া হবে। আমাকে জানানো হল ব্যাংকে ডলার শেষ হয়ে গেছে আমাকে ইউরো কিনতে হবে। আমি যেহেতু ভারত হয়ে আর্জেন্টিনা যাবো তাই ৭০০ ইউরো চেয়ে ফরম পূরণ করেছিলাম। ফরম জমা দিতে গিয়েই, আমাকে জানানো হল দেরি হবে। সময় হলে ওনারাই আমাকে ডাকবেন। বসতে দেওয়া হল। সেখানেও প্রায় এক ঘন্টা বসে রইলাম। এর পর ফরম জমা নেওয়া হল। ফরম জমা নেওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যেই আমাকে ডাকা হল। ব্যাংকার যিনি কাগজপত্র পরীক্ষা করে ভাউচার দিচ্ছিলেন আমার ফরম দেখে রীতিমত চিৎকার দিয়ে উঠলেন, “কার এমন মাথা খারাপ হয়েছে যে ৭০০ ইউরো চাইছে”। আমার আওয়াজ দেওয়াতেই উনি জানালেন, ৭০০ ইউরোতো কোনোভাবেই নয়। আমাকে ১১০ উইরোর বেশি দেওয়া হবে না। অনেক অনুরোধের পরে উনি ১৫০ উইরো লিখে দিলেন এবং জানালেন এর বেশি এখান থেকে দেওয়া হয় না। বেশির দরকার হলে ভারতের ভিসা নিয়ে এখানে আসতে, তখন তারা ডলার বা ইউরো দিবেন না, ওনারা ট্রাভেলার চেক ইস্যু করে দিবেন। আমি কিছুটা হতাশ কারণ আর সময় কই! তারপরেও ১৫০ ইউরোই নিলাম। ভাউচার নিয়ে আরেক টেবিলে জমা দিয়ে সেখান থেকে সিল লাগিয়ে ক্যাশ কাউন্টারে জমা দিয়ে ১৫০ ইউরো কিনে নিলাম। ক্যাশ কাউন্টার থেকে একটি টোকেন দেওয়া হল। এটি আরেক টেবিলে জমা দিতে বলা হল। ঐ টেবিল থেকে জানানো হল পাসপোর্টের যে পাতায় এন্ডোর্স করা হয়েছে সে পাতাটি সহ এককপি ফটোকপি লাগবে। এটি দিলেই তারা আমাকে এন্ডোর্সমেন্টের সার্টিফিকেট দিবেন। ফটোকপি জমা দিলাম। সার্টিফিকেটও পেলাম। কিন্তু ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলাম, সন্ধ্যা ৬ টা বাজে। এর মানে আজকে আর কোনো কাজ করা সম্ভব নয়। আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এন্ডোর্সমেন্ট হয়ে গেলে আজকে রাতেই মানে ১৬ তারিখ রাতেই ভারতের ভিসার জন্য লাইনে দাড়াবো।